রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার প্রস্তাবিত নিয়োগ বাতিল করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করে গত ১৭ আগস্ট কোম্পানিটিকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠায় কর্তৃপক্ষ।
আইডিআরএ জানায়, ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া এর আগে পারিবারিকভাবে পরিচালিত আরেকটি প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় পরস্পর যোগসাজশে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গঠিত নিরীক্ষা টিম সোনালী লাইফে প্রায় ১৮৭ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত করে। পরে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পৃথক তদন্তে প্রায় ৩৫৩ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়। এ অনিয়মে কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান, পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত সিইওসহ ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার নামও আসে।
পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সোনালী লাইফের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে গত এপ্রিল মাসে বিমা আইন, ২০১০-এর ধারা ৯৫ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এ পাঠানো হয়েছে। দুদক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়াসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
আইডিআরএ জানায়, বিমা কোম্পানির সিইও নিয়োগ ও অপসারণসংক্রান্ত প্রবিধানমালা, ২০১২ অনুযায়ী দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি এ পদে নিয়োগের যোগ্য নন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাকে দায়িত্ব দেওয়া নৈতিকতা ও গ্রাহক স্বার্থের পরিপন্থি হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুখ্য নির্বাহী পদে নিয়োগ দেওয়া গ্রাহকদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এ কারণেই রূপালী ইন্স্যুরেন্সের প্রস্তাবিত নিয়োগ আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া প্রথমে বলেন, “একটু পরে জানাচ্ছি।” তবে এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তারও কোনো জবাব দেননি।