শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির দায়ে ১২ জন বিনিয়োগকারীকে মোট ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত সময়ে যোগসাজশের মাধ্যমে সিরিজ ট্রেডিং করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়। ওই সময়ে শেয়ারের দাম ১০ টাকা থেকে বেড়ে ৩১ টাকা ৫০ পয়সায় তোলে। অর্থাৎ মাত্র এক মাস ১৮ দিনে দাম বেড়ে যায় ২১৫ শতাংশ। এভাবেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে অভিযুক্তরা অবৈধ মুনাফা আদায় করেন।
তদন্তে উঠে আসে, কারসাজির মূল হোতা ছিলেন মো. সজিব হোসেন ও মো. সুলেমান। তাদের সহযোগিতা করেছেন আরও ১০ জন শেয়ার ব্যবসায়ী—মো. শরিফ, তাসলিমা বেগম, আব্দুল কুদ্দুস আমিন, একেএম খলিলুর রহমান, নুরুন্নেসা সাকি, মো. বেলাল হোসেন, আরিফা বেগম লাকি, তারান্নুম সাফি, মাহমুদা আক্তার ও কাজী মহিউদ্দীন আহমেদ।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মো. সজিব হোসেনকে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং মো. সুলেমানকে ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মো. শরিফকে ৩৩ লাখ, তসলিমা বেগম ও সজিব হোসেনকে যৌথভাবে ২৭ লাখ, আব্দুল কুদ্দুস আমিনকে ২৭ লাখ, একেএম খলিলুর রহমানকে ২৪ লাখ, নুরুন্নেসা সাকিকে ১৯ লাখ, বেলাল হোসেনকে ৯ লাখ, আরিফা বেগম লাকিকে ৮ লাখ, তারান্নুম সাফিকে ৪ লাখ ৫০ হাজার এবং মাহমুদা আক্তার ও কাজী মহিউদ্দীন আহমেদকে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে।
বিএসইসির মতে, অভিযুক্তরা বাজারে কৃত্রিম চাহিদা সৃষ্টি করে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করেছেন এবং এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত জরিমানার অর্থ ৩০ দিনের মধ্যে কমিশনের অনুকূলে জমা দিতে হবে, নচেৎ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০০০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাফকো স্পিনিং বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মাত্র ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। এরপর থেকে আর কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়নি।
কোম্পানির শেয়ার কাঠামো অনুযায়ী, উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭.০৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬২.৯২ শতাংশ শেয়ার।