শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ডিভিডেন্ড স্থানান্তরের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি জারি করা এক নির্দেশনায় বিএসইসি জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে বার্ষিক বা চূড়ান্ত ক্যাশ ডিভিডেন্ড হিসেবে ঘোষিত অর্থ একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে (ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট) স্থানান্তর করতে হবে। কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এটি বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) এর কমপক্ষে একদিন আগে এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে রেকর্ড ডেটের একদিন পরে করতে হবে। আগে ডিভিডেন্ড তহবিল স্থানান্তরের জন্য ঘোষণার পর ১০ দিন পর্যন্ত সময় দিত। বর্তমান ঘোষণা তা আরও সহজ হল।
এই ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্টটি শুধুমাত্র ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিতরণের জন্য ব্যবহার করা হবে। যদি এজিএমে অনুমোদিত চূড়ান্ত পরিমাণ প্রাথমিকভাবে ঘোষিত পরিমাণের চেয়ে কম হয়, তাহলে ইস্যুকারী অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করতে পারবে এবং আইন ও অভ্যন্তরীণ আর্থিক প্রোটোকল মেনে অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে, যা ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্টে ঘোষিত অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করবে। এই প্রত্যয়নপত্রটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং কোম্পানি সচিব কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে এবং এজিএমে উপস্থাপন করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন ক্যাশ ডিভিডেন্ডের জন্য ইস্যুকারীকে রেকর্ড ডেট থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষিত অর্থ ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে।
এছাড়াও, যদি ইস্যুকারী একটি ব্যাংকিং কোম্পানি হয়, তাহলে ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্টটি ভিন্ন একটি ব্যাংকে রাখতে হবে, নিজের ব্যাংকে নয়। নির্দেশনায় কোম্পানিগুলোকে এমন কোনো ব্যাংকে ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট রাখতে নিষেধ করা হয়েছে যেখানে ইস্যুকারী এবং ব্যাংকের মধ্যে কোনো সাধারণ পরিচালক থাকে, যাতে স্বার্থের সংঘাত এড়ানো যায়।
তবে কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, ডিভিডেন্ডের অর্থ স্থানান্তরে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেটিও পুরোপুরি উপযুক্ত নয়। যেহেতু কোম্পানিগুলোর এজিএমের পর ডিভিডেন্ড পরিশোধের জন্য ৩০ দিন পর্যন্ত সময় থাকে, তাই ডিভিডেন্ড এজিএমে অনুমোদনের পরেই অর্থ জমা দেওয়ার আবশ্যকতা এলে আরও ভালো হতো।
তারা বলেন, অনেক কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা বিতরণ করে না। এমন কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য এই নিয়মটি মূলত প্রবর্তন করা হয়েছিল।