সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বীচ হ্যাচারি লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে ও শেয়ার দামে উল্লেখযোগ্য প্রবণতা দেখা গেছে। মঙ্গলবার (০৬ মে) কোম্পানিটির শেয়ার গত দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আবার গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির ৯০ লাখ ৮ হাজারের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির মোট শেয়ার রয়েছে ৪ কোটি ১৪ লাখ। এরমধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে ৪৩.৯১ শতাংশ বা ১ কোটি ৮২ লাখের কম শেয়ার। যার মধ্যে গতকাল একদিনেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার লেনদেন হয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ।
এদিকে, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেন হয়েছে ৫৪৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। আর বীচ হ্যাচারির একাই লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের। এরমধ্যে কেবল বীচ হ্যাচারির লেনদেন হয়েছে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০.০৪ শতাংশের বেশি।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের ১২ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল সর্বোচ্চ ১২৬ টাকায়। আর পরের মাসেই অর্থাৎ এপ্রিলের ২৯ তারিখে শেয়ারটির দাম বছরের সর্বনিম্ন ৫৪ টাকায় লেনদেন হয়। গতকাল মঙ্গলবার ৫৬ টাকা ৫০ পয়সায় ক্লোজিং হয়েছে। যা গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারটির দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দাম।
কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ রেকর্ড লেনদেন এবং সর্বনিম্ন দাম- বিপরীতমুখী এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে এবং এর কারণ ও প্রভাব নিয়ে ফেসবুক গ্রুপে চলছে ব্যাপক আলোচনা। বিনিয়োগকারীরা ফেসবুকে বীচ হ্যাচারির শেয়ারের লেনদেন ও দাম নিয়ে নানা ধরণের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
বিনিয়োগকারীদের অনেকে বলেছেন, যারা কয়েকদিন আগে শেয়ারটি কম দামে তুলেছিল, তারা মঙ্গলবার মুনাফা তুলেছে। এদিন শেয়ারটি শুরুর দিকে ৬৬ টাকায় লেনদেন হয়। যা ছিল হল্টেডের কাছাকাছি। তবে সেল প্রেসারের কারণে শেয়ারটির দাম ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক প্রবণতায় থাকে। দিনশেষে আগের দিনের দামের নিচে চলে যায়।
তবে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী বলেছেন, বড় বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ারটি সংগ্রহ করেছে। তা না হলে এতো পরিমাণ শেয়ার বর্তমান বাজারে হজম করা কঠিন। ৬৬ টাকা ওঠার পর যেভাবে মুনাফা তোলার চাপ দেখা গেছে, বড় বিনিয়োগকারীদের যদি হাত না থাকতো, তাহলে শেয়ারটি দিনের প্রথম ভাগেই ক্রেতাশুন্য অবস্থায় পড়ে যেতো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেয়ারটিতে শক্ত ক্রেতা দেখা গেছে। যার কারণে মুনাফা তোলার বড় চাপেও শেয়ারটির দাম সেভাবে পড়েনি। তলানিতে নেমে আসা শেয়ারটি বড় বিনিয়োগকারীরা তুলে নিয়েছেন।
এদিকে, গতকাল কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিকের মুনাফা প্রকাশ করেছে। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফায় বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারী-মার্চ’২৫) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৬০ পয়সা।
অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২৪-মার্চ’২৫) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৫৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৯২ পয়সা।
এদিকে, ৩১ মার্চ, ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ১৬ টাকা ৪৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১২ টাকা ৪৯ পয়সা।