বেসরকারি খাতের শীর্ষ ব্যাংক ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি তাদের এক গ্রাহক মুর্তজা আলীর বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছে। ঢাকার প্রথম যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে ৪ মার্চ এ মামলা করেছেন ইস্টার্ণ ব্যাংকের আইন বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা এইচ এম হাসান মাহমুদ।
ইস্টার্ন ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ইস্টার্ণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মোঃ মুর্তজা আলী। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে এ মামলা করেন তিনি।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইষ্টার্ণ ব্যাংক মুর্তজা আলীর বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার ডিক্রি জারির আদেশ চেয়ে আলোচিত মামলাটি দায়ের করে। আদালত বিবাদীর বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় ইস্টার্ণ ব্যাংক বলেছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার বিবাদী মুর্তজা আলী ইস্টার্ণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যাংকের সুনাম নষ্টের জন্য চট্টগ্রামের আদালতে মিথ্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ব্যাংকের কারও বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে ইস্টার্ণ ব্যাংক আরও উল্লেখ করেছে, গোলাম মুর্তজার দায়ের করা মিথ্যা মামলার ঘটনাটি ফলাও করে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করা হয়। এতে ব্যাংকের সুনাম নষ্ট হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালকেরা সবাই সম্মানিত পরিবারের সদস্য, উচ্চশিক্ষিত এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। মূলত হয়রানি ও সুনাম ক্ষুণ্নের জন্য এ মামলা করেছেন মুর্তজা আলী।
অন্যদিকে মর্তুজা আলীর করা মামলায় বলা হয়েছিল, ২০১৭ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের ওআর নিজাম রোড শাখায় পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে জমা করেন। ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, তিনি ৭ শতাংশ সুদ পাওয়ার কথা থাকলেও সেটি পাননি। পরে মুনাফাসহ টাকার পরিমাণ ছয় কোটি ১০ লাখ হলে তিনি চান্দগাঁও শাখায় স্থানান্তর করেন।
২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনি চান্দগাঁও শাখায় মোট পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকার ছয়টি এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করেন এবং এর বিপরীতে একটি ওএসডি (সিকিউরড ওভারড্রাফট) ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০১৯ সালে বিদেশে থাকার সময় তিনি জানতে পারেন, ব্যাংকটির চান্দগাঁও শাখায় তার নামে দুটি জাল সঞ্চয়ী হিসাব ও চারটি জাল ঋণ হিসাব খোলা হয়েছে। জাল স্বাক্ষর ও ভুল তথ্য ব্যবহার করে এসব হিসাব থেকে নয় কোটি ৭৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৭ টাকা ঋণ নেওয়া হয় এবং পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
মুর্তুজা আলী তার পাওনা ফেরত চেয়ে ব্যাংক বরাবর আইনি নোটিশ পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি। তার দাবি, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের কাছে মোট ১১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন।