1. [email protected] : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক : শেয়ার সংবাদ প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারসংবাদ.কম : শেয়ারসংবাদ.কম
  3. [email protected] : Zahir Islam : Zahir Islam
  4. [email protected] : muzahid : muzahid
  5. [email protected] : nayan : nayan
  6. [email protected] : khadija : khadija khadija
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংকের অদূরদর্শী নীতিতে অস্থিরতা বাড়ছে 

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১২ মে, ২০২৪
Bangladesh-Bank-upobank

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা অদূরদর্শী ও অসময়োপযোগী নীতি-উদ্যোগ এবং ঘোষণায় আর্থিক খাতে বিভিন্ন সময়ে অস্থিরতা দেখা গেছে। এর ফলে আমানতকারীদের ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের প্রবণতা বেড়েছে, আবার উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছে জনগণ। সাম্প্রতিক কালে কিছু ব্যাংককে দুর্বল ঘোষণা করে আমানতকারীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে সংস্থাটি। আবার জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগেও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।

একটি গ্রুপের মালিকানাধীন পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের চলতি হিসাবে বড় রকমের ঘাটতি থাকার পরও তাদের ঋণ বিতরণ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন দ্বিমুখী নীতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির অনেক ভালো উদ্যোগও ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছে না ব্যাংকগুলো।


দুর্বল ব্যাংক সবল হয়নি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দিয়ে আব্দুর রউফ তালুকদার ২০২২ সালের ৪ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ১০টি দুর্বল ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ এই ঘোষণার পর বিশেষ পর্যবেক্ষণে থাকা কয়েকটি ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা ব্যাপক হারে টাকা তুলে নেন।

আগে থেকেই পর্যবেক্ষণে থাকা কয়েকটি ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা যোগ দিতে পারলেও এখন পারছেন না। তাঁরা অনিয়ম ধরলেও অনেক ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। এখন সরকারি-বেসরকারি ১৫ ব্যাংক চলছে পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক দিয়ে।

তদারকিতে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান যখন কোনো ব্যাংককে দুর্বল হিসেবে ঘোষণা দেন, তখন সেটির টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। এটা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পেশাদার আচরণের মধ্যে পড়ে না।

ডলারের বাজারে অস্থিরতা কাটেনি

২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ডিসেম্বর নাগাদ ডলার–সংকট কেটে যাবে। ঋণপত্র (এলসি) খুলতে কোনো বাধা নেই। তবে আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য অতিরিক্ত দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) কিংবা মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং) হলে কোনো ছাড় নয়।

এরপর প্রায় দেড় বছর হতে চললেও ডলার–সংকট কাটেনি। এখনো চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছেন না ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। এত দিন ডলারের বাজার নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে। পাশাপাশি রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২২ সালের নভেম্বরে মোট রিজার্ভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ওপরে, যা এখন কমে হয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলার। তবে প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে।

এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে ১১৭ টাকায় নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সাময়িকভাবে দাম বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

স্মার্ট সুদ টিকল না এক বছরও

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে সুদহার ৯ শতাংশে আটকে রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর্থিক সংকটের পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে গত বছরের জুলাই থেকে সুদের হার নির্ধারণে ট্রেজারি বিল নির্ভর স্মার্ট সুদহার চালু করে সংস্থাটি। এতে সুদহার সাড়ে ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত সপ্তাহেই তা বাতিল করে সুদহার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে স্বস্তি ফেরাতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

স্বতন্ত্র পরিচালক পদে ওরা কারা

গত সপ্তাহে বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসে। এতে নতুন শেয়ারধারী পরিচালকের পাশাপাশি তিনজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলো নিলেও এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই পর্ষদ পরিবর্তন করে দেয়। এতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে এমন তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যারা চট্টগ্রামের একটি বিশেষ গ্রুপের পরিবারের সদস্য ও আইনজীবী। ফলে স্বতন্ত্র পরিচালক পদটিকেও বিতর্কিত করে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্বেচ্ছায়, নাকি জোরপূর্বক একীভূত

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় চলতি বছরে স্বেচ্ছায় ও আগামী বছরের মার্চ থেকে জোরপূর্বক একীভূত করার বিষয়টি উল্লেখ আছে। তবে এটাকে অবজ্ঞা করে সম্প্রতি সংস্থাটির কিছু কর্মকর্তার অতি উৎসাহে পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে আমানতকারীরা বেসিক ব্যাংক থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা ও ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে প্রচুর টাকা তুলে নেন। জোর করে একীভূত করার বিরোধিতা করেছে ন্যাশনাল ও বেসিক ব্যাংক। এদিকে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের চলতি হিসাব ঋণাত্মক হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এসব নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, ‘তদারকি না করে কিছু পরিচালককে ব্যাংকগুলো খারাপ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পুরো খাতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক ও কঠোর সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আজ ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। কাউকে দুর্বল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত নয়। এর চেয়ে সঠিক তদারকির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর উন্নতির দিকে নজর দেওয়া দরকার। জোরপূর্বক একীভূত না করে ব্যাংকগুলোর নিজেদের উদ্যোগে এক হওয়ার সুযোগ রাখা উচিত। কাউকে ধরা, কাউকে ছাড়ার নীতি আর চলতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ডলারের দাম আরও আগে বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে সমস্যাটা কেটে যেত। এরপরও সর্বশেষ যা হয়েছে, তা মন্দের ভালো।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সূচকের পতনে চলছে লেনদেন

  • ১১ ডিসেম্বর ২০২৪